Health

নিম পাতার উপকারিতা – Benefits of Neem Leaves

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম পাতার উপকারিতা র (nim patar upokarita)  কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি। নিম গাছের পাতা, নিমের ফল, নিমের কান্ড, নিমের ডগা, নিমের ছাল। এমনকি নিমের গোড়ালিও আমাদের জন্য উপকারী।

আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে নিমের ভূমিকা ও অপরিসীম। উপমহাদেশের আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে।

প্রায় 5000 বছর ধরে আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে এই নিমের ব্যবহার হচ্ছে। নেমে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক।

নিম গাছ অনেক ধরনের রোগের সমাধান দিতে পারে। নিম গাছকে ভেষজ উদ্ভিদ অথবা ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবেও ধরা হয়।

নিম গাছে থাকা ঔষধি গুন অনেক ধরনের রোগকে ভালো করতে পারে।

ব্রণের সমস্যা সমাধানে নিম অপরিসী ভূমিকা পালন করে। ব্রণ ছাড়াও ত্বকের যেকোনো সমস্যা নিম দূর করতে পারে।

নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।

অনেকের নিমপাতা দরজার সামনে ঝুলিয়ে রাখে ।

এটাকে মানুষজন শুভ হিসেবে ধরে এবং তারা বিশ্বাস করে ঘরে কোন রকমের অসুখ ব্যাধি ঢুকতে পারবে না।

এবং অশুভ কিছু হবে না যদিও এটা ভ্রান্ত ধারণা।  তবে অনেক মানুষ এটা বিশ্বাস করে।

নিমপাতা মানুষ ঔষধি হিসেবেও খেয়ে থাকে যাতে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হয়্।

ধরা হয় নিমের মধ্যে 130 এরও বেশি ঔষধি গুন রয়েছে। তাহলে ধরে নিন নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা কত হতে পারে?

নিম পাতার পুষ্টিগুণ, নিম পাতার গুণাগুণ ও নিম পাতার উপকারিতা কী? – Nutritional value of neem leaves :

অন্যান্য গাছের মত নিম শুধু গাছ নয় নিম একটি উপকারী। এই নিম গাছ চিকিৎসা শাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এ নিম গাছ তার অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিফাঙ্গাল,  এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলির জন্য বিখ্যাত চিকিৎসা শাস্ত্রে।

নিমের পাতা, ছাল-বাকল, নিমের বরি, রস, তেল এবং গাছের অন্যান্য সব অংশ মানুষের শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকার বয়ে আনে।

নিম পাতার ব্যবহার – Uses of neem leaves:

নিম পাতার ব্যবহার ও গুণাবলী অতুলনীয়। কোনরকম সাইড ইফেক্ট ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে নিমপাতা অনেক ধরনের রোগ সারাতে সহায়তা করে।

নিমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও প্রদাহ কমানোর গুণাবলি যেমন অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ভাইরাস, এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি আছে।

নিম গাছকে প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক গাছ বলা হয়। তাহলে চলুন জেনে নেয় নিম গাছের কিছু আকস্মিক ঔষধি গুণাবলীর কথা:

রোগ প্রতিরোধে নিম পাতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা – Very important role of neem leaves in prevention of diseases:

নিম গাছ ও গাছের পাতা বিভিন্ন ধরনের রোগ ও রোগের প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এবং এই নিম গাছ এবং নিম গাছের প্রতিটি অংশ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী ।

নিমের মধ্যে থাকা নানা ধরনের ঔষধি গুন এবং ভেষজ উপাদান আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তোলে।

নিম পাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা – Strengthen the immune system :

নিম পাতা মানুষের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

নিমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলি রয়েছে।

যা মানুষের শরীরকে মুক্ত মৌল হতে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

এই নিম গাছের ঔষধি গুন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলোকে রক্ষা করতে পারে এবং সুস্থ সবল রাখতে সহায়তা করে।

২. ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস প্রতিরোধ – Protection against bacteria and viruses:

নিম পাতা মানবদেহের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

নিমে উপস্থিত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাস গুণাবলি ও উপাদানের কারণে এটি মানুষের বডি থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দূর করতে সাহায্য করে।

নিম পাতা ঠান্ডা, সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং অন্যান্য অনেক ধনের ভাইরাল সংক্রমণ থেকে হিউম্যান বডিকে রক্ষা করতে সহায়ক হতে পারে।

৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য – Help control diabetes :

নিমপাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে ।

নিম পাতা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে । এবং অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিম পাতা ইনসুলিনের কার্যকারী ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।

যারা প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চান নিমপাতা তাদের জন্য প্রাকৃতিক ভাবে সহায়ক উপায় হতে পারে।

৪. ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধ – Prevention of fungal infections:

নিমপাতা বিভিন্ন প্রকার ফাংগাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । নিম পাতার মধ্যে এন্টি ফাঙ্গাল গুণাবলীও রয়েছে।

এই নিম পাতার অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান , যেটা ফাঙ্গাল ইনফেকশন, যেমন ডার্মাটোফাইটিস এবং অন্যান্য ছত্রাকজনিত রোগকে প্রতিরোধ করে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো স্ট্রং করে।

নিম পাতা ত্বকের ছত্রাক জনিত রোগ হতে দেয় না। এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখে ।

৫. প্রদাহ কমানো -Reduce inflammation :

বিভিন্ন প্রকার প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে নিমপাতা অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ।

নিমের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের কারণে এটি শরীরের প্রদাহ বা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

নিম পাতা বিশেষ করে অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাউট এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত ও ব্যথাজনিত রোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে।

৬. হজম সমস্যা সমাধানে সাহায্য – Helps in solving digestive problems:

নিমপাতা হজমের সমস্যা বদহজম ও পেটের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে ।

নিম পাতা গ্যাস্ট্রিক গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ও পেটের ব্যথা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

নিম পাতা লিভার কে ভালো রাখতেও সাহায্য করে।

লিভার ভালো থাকার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন বের করে দিতে পারে এই নিমপাতা ।

৭. ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ – Prevention of malaria:

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে নিমপাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে মশা কামড়ের ফলে।

এই মশার কামড়ের ফলে যে সংক্রামক রোগ আমাদের শরীরের মধ্যে সৃষ্টি হয় সেটিও প্রতিরোধ করতে পারে নিম পাতা।

বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে নিম পাতা।

মানুষের শরীরকে বিভিন্ন প্রকার পরজীবীর আক্রমণ থেকেও রক্ষা করতে পারে নিম পাতা।

৮. ত্বকের সমস্যা সমাধান – Solving skin problems:

ত্বকের যত্ন, ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে শুরু করে এলার্জির সমস্যা, ব্রণের সমস্যা এবং ত্বকে ওঠা দানা দানার সমস্যা সবকিছু সমাধান দিতে পারে এই নিম পাতা ।

নিম পাতার মধ্যে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে।

আর এই এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

ত্বকের যেকোনো ধরনের ঘা সারাতে সাহায্য করে।

ত্বককে পরিষ্কার করতে এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।

ত্বকের হওয়া পিম্পল ফুসকুড়ি এবং ঘা এর ব্যথা সারাতেও সাহায্য করে।

৯. রক্ত পরিষ্কার করা – Cleanse the blood:

রক্ত পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে নিমপাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

নিম পাতার মধ্যে থাকা ইফেক্টিভ উপাদান গুলো রক্তের টক্সিন শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।

যেটা অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে বাধা সৃষ্টি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে স্ট্রং করে।

শরীরে রক্ত পরিষ্কার থাকার কারণে রোগের নানা ধরনের রোগ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।

আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুন বারিয়ে দেয়।

১০. কীটপতঙ্গ নিধন -Pest control :

নিমপাতা কীটপতঙ্গ প্রতিরোধ ও সহায়তা করে। পাতাকে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে ধরা হয়। কারণ নিম পাতা দিয়ে তৈল তৈরি করা যায় আর নিম পাতারই তৈরিকে বলা হয় নিমের তেল।

আর নিমের তেলে থাকা উপাদান গুলো কীটপতঙ্গ নিধনে সহায়তা করে।

১১.  গর্ভনিরোধ – Contraception :

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে নিমপাতা গর্ভনিরোধেও সাহায্য করে।

কারণ নিম পাতার মধ্যে অনেক ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে।

যেমন অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং হরমোন-নিয়ন্ত্রক গুণ, যা গর্ভধারণ প্রতিরোধ করতে পারে।

প্রাচীনকালে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় নিমপাতা গর্ভনিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

তবে এটা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে প্রাকৃতিক উপাদানের থেকে আধুনিক উপায়ে গর্ভনিরোধ করা অনেক সহজ ও নিরাপদ।

নিম পাতার অপকারিতা – Disadvantages of neem leaves:

নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা আমাদের জানা উচিত।

যেমন অনেক উপকারিতা আছেনিম পাতার তেমনি অনেক অপকারিতাও আছে।

তাই নিম পাতার ক্ষতিকর দিক গুলো আমাদেব জানা দরকার।

নিম পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান, এবং এটির ব্যবহার ও নিরাপদ ।

তবে সবকিছুরই একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে এই নিম পাতা ও তার ব্যতিক্রম নয়, বিশেষ করে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয় তাহলে ।

কারণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। তাহলে চলুন জেনে নেয় নিম পাতার কিছু অপকারিতার কথা:

1. হরমোনাল প্রভাব – Hormonal effects :

অতিরিক্ত নিমপাতা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে হরমোনাল অনেক প্রভাব দেখা দিতে পারে।

যেমন নিমপাতা গর্ভনিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হলে এটি গর্ভধারণের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে ।

এবং এই নিম পাতার অতিরিক্ত ব্যবহার অনেক সময়ে গর্ভধারণে বাধাও সৃষ্টি করতে পারে।

তাই অবশ্যই ডাক্তারদের বা চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী এটি ব্যবহার করতে হবে এবং নিয়ম মতো খেতে হবে।

কারণ এই নিম পাতার ভুল ব্যবহার আমাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে।

2. অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া – Allergic reaction :

নিমপাতা যেমন এলার্জির সমস্যা দূর করতে পারে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে ।

কারণ সবার স্কিনে তো সবকিছু সুট করে না।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিমপাতা ব্যবহারের ফলে মানুষের ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে এলার্জি হতে পারে ফুসকুড়ি হতে পারে রেস হয়ে যেতে পারে।

এরকমটা যদি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিমপাতা ব্যবহার করতে হবে।

3. পাকস্থলীর সমস্যা – stomach problems:

অতিরিক্ত নিমপাতা খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

এবং অতিরিক্ত নিম পাতার নির্যাস গ্রহণের ফলে পাচনতন্ত্র সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যেমন পেট খারাপ হওয়ার, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা হওয়া এবং বমিও হতে পারে।

4. গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর প্রভাব -Harmful effects during pregnancy :

গর্ভাবস্থায় নিম পাতা খাওয়া যাবে কি? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই জেগে থাকে। তবে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে নিমপাতা খাওয়া অনেক বিপদজনক হতে পারে।

কারণ নিম পাতা গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে।

এবং গর্ভে থাকা শিশুরও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় নিমপাতা খাওয়াটা এড়িয়ে চলাই উচিত।

5. কিডনি এবং যকৃতের উপর প্রভাব – Effects on kidney and liver :

আমরা কম বেশি সবাই জানি নিম পাতার স্বাদ তেতো। আর অতিরিক্ত তেতো খাওয়া কিডনি এবং যকৃতের জন্য বিপদজনক।

দীর্ঘকাল ধরে আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে নিমপাতা খাই তাহলে আমাদের যকৃত এবং কিডনিতে প্রবলেম দেখা দিতে পারে।

যেটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর এবং মানুষকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।

তাই সেজন্য বলা যায় যে নিমপাতা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে পরিমাণ মতো নিমপাতা খেতে হবে।

 

নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম -Neem leaf juice consumption rules :

নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক ।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় ।

বিশেষ করে সকালে খালি পেটে নিমের দশটি পাতা ও পাঁচটি গোলমরিচ বেটে খেলে ডায়াবেটিস অনেক অংশে নিয়ন্ত্রণ হয় ।

আমরা জানি ডায়াবেটিস রোগ কখনো ভালো হয় না কিন্তু এই ডায়াবেটিস রোগটা একবার হয়ে গেলে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, ডায়াবেটিসেরটা যদি বেড়ে যায় তাহলে শরীরে নানা ধরনের রোগী সৃষ্টি হতে পারে এবং কি হার্টের রোগ, হার্ট ফেলিওর এবং ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার মতো রোগ হয়ে থাকে হতে পারে।

আরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিমপাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মতে, নিম পাতার সাথে চিনি বা চিনির মিছরি দিয়ে খেলে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং শ্বাসকষ্টের মতো রোগ ও ভালো করতে পারে।

নিম ফল খেলে কি হয় – What happens after eating neem fruit?

নিমকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এটি ছত্রাকনাশক, ব্যাকটেরিয়া রোধক, ভাইরাসরোধক হিসেবে কার্যকর, এবং কীট-পতঙ্গ দূর করতে সহায়ক।

ছত্রাক রোধ ও নিয়ন্ত্রণ, ম্যালেরিয়া নিরাময়, দন্তের ব্যথা উপশম, জ্বর কমানো এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণেও ব্যবহৃত হয়।

নিমের এই সব গুণাবলি একে প্রাকৃতিক এবং বহুমুখী চিকিৎসা হিসেবে পরিচিত করেছে।

নিম পাতা  উপকারিতা গুলি কি কি – What are the benefits of neem leaves?

নিম গাছ চিকিৎসা শাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এ নিম গাছ তার অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিফাঙ্গাল, এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলির জন্য বিখ্যাত।

ত্বক সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ, চুল পড়ার সমস্যা ও খুশকির সমস্যা, চুল পড়া বন্ধ করা, চুলকে সাইনি এবং উজ্জ্বলতা বাড়ানো চুলের, ত্বক উজ্জ্বল এবং সুন্দর করতে, বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে নিম পাতা ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় -What happens if you drink neem leaf juice on an empty stomach ?

নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিম পাতা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

নিমে উপস্থিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান গুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ডায়াবেটিক গুণাবলি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায়তা করে থাকে।

নিম পাতা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেসহায়তা করে, যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম আমাদের জানা দরকার।

প্রতিদিন সকালে নিম পাতা বা নিম পাতার রস খেলে আপনার দেহে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

যারা ডায়াবেটিসের রোগী আছেন এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিম পাতা গ্রহণ করতে পারেন।

নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় – What happens after taking neem leaf pills?

নিম পাতার বড়ির উপকারিতা অনেক। নিম পাতা  আয়ুর্বেদিক ও ভেষজ চিকিৎসা শাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে এবং প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতা বিভিন্ন রোগের নিরামক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

এর অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও গুণাবলীর কারণে বিখ্যাত।

এই নিম পাতা  শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ফাংগাল ইনফেকশন, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, চর্মরোগ, ইনফেকশন, সহো অনেক রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয় – What happens after eating neem leaf powder?

নিম পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে । নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা immune system কে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলতে পারে নিম পাতা ।

আমাদের বডির যেকোনো ধরনের সংক্রমণ রোগ দূর করতে সাহায়তা করে।

এছাড়াও প্রতিদিন নিমপাতা খেলে আমাদের দেহের ভিতরে দূষিত টক্সিন কে বের করে দিতে সহায়তা করে।

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার – Use of neem leaves in itching ?

চুলকানিতে ও এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার অতুলনিয় । নিমপাতাকে সংক্রামক রোগের মহা ঔষধ হিসেবে ধরা হয়।

ত্বকের যেকোনো ধরনের খুজলি পাচড়া চুলকানি এবং নানা ধরনের এলার্জি সমস্যা থেকে নিমপাতা আমাদেরকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার – Use of neem leaves in skin diseases ?

যেকোনো ধরনের চর্ম রোগে নিমপাতা ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকারী।

নিম পাতার গুণাগুন ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, ব্রণের দাগ, প্রদাহ, ফুসকুড়ি,  ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার করা, ত্বকের ভিতর থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করা , ত্বকের ছিদ্রগুলিকে ছোট করা ও ছিদ্রের জমাট দূর করতে সাহায্য করে।

নিম ত্বকের মধ্যে জমে থাকা ধুলা-ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে পারে , ফলে ত্বক স্বাস্থ্যবান ও উজ্জ্বল হয়।

মুখে নিম পাতার ব্যবহার ও এর গুরুত্ব অনেক।

ব্যবহার বিধি:

  1. নিম পাতা বেটে বা মিক্সার দিয়ে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করে নিন।
  2. নিম পাতার এই পেস্টকে ত্বকে লাগিয়ে নিন ও ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন ও অপেক্ষা করুন শুকানো অবধি।
  3. এরপর ঠান্ডা পানি বা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

 

দাউদে নিম পাতার ব্যবহার – Uses of neem leaves in Dawood :

নিম পাতা বাটা এবং নিমের রস দাও ইউজ করা যায়। দাউদের ফলে আমাদের শরীরে যে চুলকানিটা হয় বা এলার্জি সমস্যা দেখা দেয় এটা নিধন করতে পারে এই নিম পাতা।

এবং দাউদ ভালো করতেও সাহায্য করে নিমপাতা নিয়মিত ব্যবহারের দাউদ ও ভালো হয়।

নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা -Benefits of bathing with neem leaves :

নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করলে কি হয়? আমাদের জানা দরকার।

নিমপাতা গাছ থেকে পেরে ভালোভাবে পরিষ্কার করে পানির সাথে মিশিয়ে চুলায় অনেকক্ষণ ফুটিয়ে সেই ফুটানো পানি ঠান্ডা করে, সেই পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা অনেক।

কারণ নিমপাতা চুলকানি খুঁজলি পাচরা থেকে শুরু করে এলার্জি জাতীয় যত সমস্যা আছে এসব নিধন করতে সাহায্য ।

এলার্জির জন্য নিমপাতা এবং আমাদের বডিকে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে।

নিম পাতার রস খেলে কি সুগার কমে –  Does eating neem leaf juice reduce sugar ?

নিমপাতা আমাদের শরীরের সুগার কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে।

নিম পাতার কিছু ঔষধি গুণাবলীর কারণে এটি এই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী কারণ এটিআমাদের শরীরে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে সুগার লেভেলেও কমিয়ে থাকে।

নিম পাতার রস খেলে কি কৃমি মরে – Does neem leaf juice kill worms ?

পাতা আমাদের পেটের কৃমি কমাতেও সাহায্য করে। নিম পাতার গুড়া বা পেস্ট বানিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে সকালবেলা খেলে পেটের কৃমি দূর হয়।

নিম পাতার জুস -Neem leaf juice :

নিম পাতার জুস পান করা আমাদের সকলের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।আমাদের শরীরের নানাবির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করে।

সাবধানতা:

নিম পাতার একটি প্রাকৃতিক উপাদান হলো আমাদের সতর্কতার সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিমপাতা খাওয়া উচিত।

Shamira

Recent Posts

মধুর উপকারিতা – Benefits of honey

মধু অত্যন্ত উপকারী প্রকৃতিক উপাদান। মধু আমাদের স্বাস্থ্যের দিক থেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করতে পারে। সৌন্দর্য…

1 month ago

ত্বকের যত্নে লেবু – Lemon for skin care

লেবু তার অসংখ্য গুণে গুনাবলির জন্য অন্যতম ।ত্বকের যত্নে লেবু অনেক উপকারী ।লেবুর মধ্যে থাকা…

2 months ago

লেবুর উপকারিতা – Benefits of Lemon

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের লেবু একটি অপরিহার্য উপাদান ও অংশ।লেবু সাধারণত অন্যান্য খাবারের সাথে  বেশি ব্যবহার…

2 months ago

ত্বকের যত্নে নিম – Neem in skin care

ত্বকের যত্নে নিমপাতা এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কম বেশী সবাই জানি । কারণ ছোটবেলায় দিদার…

2 months ago

ত্বকের যত্নে হলুদ – Turmeric in skin care

প্রাচীন আমল হতেই রূপচর্চায় ও ত্বককে সুন্দর করার জন্য হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে।প্রাচীনকালের মেয়েরা নিজেদের…

2 months ago

হলুদের উপকারিতা-Benefits of Turmeric

প্রাচীন আয়ুর্বেদে  হলুদকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ এটি  শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, জীবাণুনাশ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ।…

2 months ago