Health

লেবুর উপকারিতা – Benefits of Lemon

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের লেবু একটি অপরিহার্য উপাদান ও অংশ।লেবু সাধারণত অন্যান্য খাবারের সাথে  বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। আমরা বাঙালিরা খাবারের সময় ভাতের থালায় লেবুর এক টুকরো জেনো থাকাই চাই। গরম ভাতের সাথে লেবুর রস এ যেন এক অনন্য খাবার। লেবু স্বাদে যেমন অতুলনীয় তেমনি লেবুর উপকারিতা – Labur upokarita ও অনেক।

লেবুর শরবত, লেবু পানি ও লেবু চা-ও বাঙ্গালীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় । তবে, আমরা কি জানি লেবু খাওয়ার উপকারিতা কী ?

লেবু এমন একটি ফল যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

লেবু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেমকে বাড়াতে সাহায্য করে।

তাই ডাক্তাররা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবসময় লেবু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

স্বাস্থ্য সচেতন মানুষরা সব সময় তাদের খাদ্য তালিকায় লেবু রাখেন।

কারণ লেবু পানি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। লেবু পানি খাওয়ার সঠিক সময় ও উপকারিতা আমাদের জানা উচিত।

তাহলে, দেখে নিন কখন লেবু খেলে কীভাবে আপনার শরীর উপকৃত হবে:

. লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা কী – What are the advantages and disadvantages of lemon?

লেবু আমাদের বডির জন্য অনেক উপকারী। লেবু আমাদের বডির মধ্যে থাকা মেদ ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে।

মানুষের বডির ইমিউনিটি সিস্টেমকে বুস্ট করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ত্বককে সুস্থ সুন্দর করতে সাহায্য করে। লেবু খেলে অনেক ধরনের উপকার হয়।

নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

১) লেবু খাওয়ার উপকারিতা – Benefits of eating lemons?

ভিটামিন সি গুণাবলীর জন্য লেবু বিখ্যাত। লেবুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং যেটা শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট।

আমরা যদি নিয়মিত লেবু পানি খাই (labu khaowar upokarita)  বা লেবু খাই তাহলে আমাদের বডির ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।

লেবু শরীর এর কোষ বা কোষগুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি-র‍্যাডিকেল থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

নিচে লেবু খাওয়ার কিছু হেলথ বেনিফিট এর কথা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় – Lemon boosts immunity :

লেবু একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। আর এই ভিটামিন সি আমাদের বডিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।

আমরা যদি নিয়মিত লেবু খাই তাহলে আমরা অনেক ধরনের রোগ থেকে রেহাই পাবো।

আমাদের হয়তো জানা নাই লেবুর সর্দি ও ফ্লু এর মত ইনফেকশন জাতীয় রোগ ও সারাতে সাহায্য করে।

লেবু শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে – Lemon keeps the body hydrated :

লেবু শরীরকে হাইড্রিয়েটেড রাখতে সাহায্য করে । লেবু শরীরের ভেতর থেকে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে সহায়তা করে।

এবং শরীরকে হাইড্রিয়েটেড ও ডিটক্সিফাইড করতে সাহায্য করে। নিয়মিত লেবু পানি পান করলে আপনার বডি শীতল থাকবে।

এটি আপনার বডি এবং ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সহায়তা করবে।

লেবু হজম শক্তি বাড়ায় – Lemon improves digestion:

লেবুতে ভিটামিন সি থাকার পাশাপাশি লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে । আর লেবুর মধ্যে থাকা ফাইবার আমাদের অন্ত্রের জন্য খুব উপকারী।

অন্ত্রের গতিবিধি সহজ সরল রাখতে সাহায্য করে লেবু। আর আমাদের অন্ত ভালো থাকলে আমাদের হজম শক্তি ও ভালো হবে।

লেবু আমাদের হজম শক্তিকে বাড়াতে বা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এবং হজমের সমস্যাকে দূর করে।

অনেকেই আছে যাদের হজম শক্তি কম তারা নিয়মিত লেবু খেলে তাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

লেবু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে – Lemon relieves constipation:

লেবু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর মধ্যে থাকা হাই ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে সে পানি পান করুন।

এতে আপনার পচনতন্ত্র ভালো থাকবে ও পচনতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করবে।

আপনার যদি বদহজমের সমস্যাও থেকে থাকে লেবু পানি খাওয়ার ফলে সেটিও দূর হবে।

লেবু ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করে – Lemon makes up for vitamin C deficiency:

লেবু আমাদের বডির ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। মানুষের দেহে ভিটামিন সি এর ঘাটতি দেখা দিলে মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ জীবাণু দেখা দেয়।

ঠোঁট ফেটে যায় চামড়া ফেটে যায় মুখে এবং দাঁতের গোড়ায় ঘা হয় ভিটামিন সি এর অভাবের কারণে।

লেবু এমন একটি সহজলব্য ফল যে ধনী গরিব সবাই নির্বিশেষে খেতে পারে।

তাই ডাক্তার সবসময় আমাদেরকে ভিটামিন সি বলতে লেবু খাওয়ার জন্য উপদেশ দিয়ে থাকে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে লেবু – Lemon helps in weight loss:

বর্তমান সময়ে বাড়তি ওজন আমাদের সকলেরই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়তি ওজন আমাদের কারোরই কাম্য নয় এটি আমাদের দেহের রোগ ব্যাধি সৃষ্টির কারণ হয়।

লেবুর সাথে যদি মধু মিশিয়ে খান তাহলে সেটা আরো ভালো কাজ করবে।

লেবুর মধ্যে থাকে হাই ফাইবার। আরে হাই ফাইবার আমাদের পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকতে সাহায্য করে।

দীর্ঘ সময় পেট  ভরা থাকতে সাহায্য করে।

দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকার কারণে আমরা কম খাদ্য গ্রহণ করি।

এতে করে আমাদের ওজন অনেকাংশে কমে যায়। তাই আমাদের প্রতিদিন এক গ্লাস লেবু জল খাওয়া উচিত।

লেবু ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নতি করে – Lemon improves skin health:

লেবুর মধ্যে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য ।যা আমাদের ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বলতা প্রদান করতে পারে।

এই লেবু আমাদের শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল কমাতে সাহায়তা করে ।

এবং প্রদাহ কমাতে এবং প্রদাহ হওয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। ফলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা ও পরিষ্কার দেখায়।

লেবু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে – Lemon keeps diabetes under control:

লেবু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

লেবুর মধ্যে থাকায় এন্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

এবং বডির বাড়তি ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

তাই নিয়মিত লেবু পানি খেলে বা লেবু খেলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকতে বাধ্য।

তাই চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস রোগীদের লেবু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

লেবু হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় – Lemon reduces the risk of heart disease and stroke:

চিকিৎসকদের মত অনুযায়ী লেবুতে থাকা ভিটামিন সি রক্তচাপ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও রক্ত সংবহন তন্ত্রের রোগ গুলো হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

লেবুর মধ্যে ভিটামিন সি প্রায় আঠারো দশমিক 6 মিলিগ্রাম।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন 65 থেকে 90 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন।

তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় লেবু থাকাটা জরুরি।
মানুষের দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে লেবু।

লেবুর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।

তাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগী কেস প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় লেবু রাখাটা দরকার।

তাহলে অনেকাংশী রক্তচাপ কমে যাবে।

লেবু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে – Lemon removes bad breath:

লেবু আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। প্র

তিদিন সকালে আপনি যদি এক গ্লাস লেবু পানি খেতে পারেন তাহলে অনেকাংশী মুখের দুর্গন্ধ দূর করা সম্ভব।

এই লেবু মুখের মধ্যে থাকা লালা গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করতে পারে।

ফলে মুখ সহজে শুকিয়ে যায় না হলে মুখে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট দুর্গন্ধ আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কম বের হয়।

আমরা অনেক সময় নানা ধরনের মাছ মাংস এবং সবজি খেয়ে থাকি ফল খেয়ে থাকি পেঁয়াজ খেয়ে থাকি যেগুলো ফলে আমাদের মুখ থেকে এগুলোর গন্ধ বেরোয়।

এই খাবারগুলো খাওয়ার পর আমরা যদি লেবু পানি খেতে পারি তাহলে আর আমাদের মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হবে না।

আমরা যদি লেবু পানি দিয়ে কুলি করি তাহলে আমাদের মুখের গ্রন্থি গুলো ভালো থাকে এবং বুকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

লেবু কিডনির পাথর প্রতিরোধ করতে পারে – Lemon can prevent kidney stones:

লেবু কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও কিডনির পাথর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্র লেবুর মধ্যে আছে। লেবুর মধ্যে পুরোটাই পানি লেবুর মধ্যে পাওয়া যায় ভরপুর সাইট্রিক এসিড।

আরে লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক এসিড কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধে এবং প্রতিকার করে পাথর বের করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক এসিড এমন একটি উপাদান যেটি আমাদের প্রস্রাবের অম্লতা দূর করতে সাহায্য করে।

তাছাড়া আমাদের দেহের ভেতর হওয়া ছোটখাটো পাথরও ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে।

লেবু শরীরের পানি ধারণ ক্ষমতা বজায় রাখে – Lemon maintains the body’s water retention capacity:

আমরা অনেক সময় অতিরিক্ত পানি খেয়ে ফেলি।

এই লেবু আমাদের শরীরে পানি ধারণ ক্ষমতা কেউ বজায় রাখতে সাহায্য করে। এবং লেবু আমাদের দেহে পিএইচ এর মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

আমাদের অনেকই শরীর ফুলে যাওয়ার বা ফোলার একটা সমস্যা থাকে।

এবং আমরা যখন ফোলায় জায়গাগুলোতে চাই তখন মনে হয় জায়গাগুলোর ভিতরে ঢুকে যায় মনে হয়েছে পানি আছে।

লেবু এই শরীর ফুলে যাওয়া বা পানি জমে যাওয়ার সমস্যাকেও সমাধান করতে পারে।

তাই আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত লেবু খাওয়া উচিত।

2) লেবু খাওয়ার অপকারিতা – Disadvantages of eating lemon:

লেবু খাওয়ার যেমন উপকারিতা আছে তেমনি লেবু খাওয়ার অপকারিতা ও আছে ( labu khaowar opokarita)।

সবাই যে লেবু খেতে পারে এমন না কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের লেবু খেলে সমস্যা হতে পারে।

লেবু খাওয়ার ক্ষেত্র আমাদের কিছু সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।

নিজে কিছু লেবু খাওয়ার অপকারিতা তার কথা ব্যাখ্যা করা হলো:

পেট খারাপ – upset stomach:

লেবু খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিন্তু অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে।

আমরা জানি লেবু আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং হজমের সহায়তা করে থাকে।

লেবুর মধ্যে এক ধরনের এসিড থাকে আর এই এসিটি আমাদের হজমে সহায়তা করে।

কিন্তু অতিরিক্ত এসিড আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে লেবুর রস খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের পেটে এসিডের মাত্রাও বেড়ে যায়।এতে করে আমাদের পেটের সমস্যা হয়ে যেতে পারে এবং পেট খারাপ হতে পারে।

ডিহাইড্রেশন – Dehydration:

আমরা অনেক সময় রোদে কাজ করে বা বাড়ি থেকে এসে বা বাহিরে বসে যদি আমাদের অতিরিক্ত গরম লাগে তখন আমরা লেবু পানি করে থাকি।

অতিরিক্ত গরম পড়লে আমরা ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচার জন্য লেবু পানি পান বা লেবুর শরবত খেয়ে থাকি

কিন্তু আমরা হয়তো জানিনা লেবু পানি অতিরিক্ত খেলেও আমাদের শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারে।

আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু পানি খাই এবং লেবু পানির শরবত খাই বা লেবুর সাথে বেশি পরিমাণে চিনি মিক্স করে খাই।

তাহলে আমাদের প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায়।এতে আপনি আরো বেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারেন এবং আরো বেশি ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারেন।

অতিরিক্ত প্রস্রাবের ফলে বা প্রস্রাবের সাথে ইলেক্ট্রোলাইটস এবং সোডিয়ামের মতো উপাদানগুলিও আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যাবে।

এই উপাদান গুলোর যে ঘাটতি হলেই আমাদের শরীরে ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।

তাই গরমকালে অবশ্যই সাবধানতার সাথে লেবু পানি গ্রহণ করা উচিত।

এসিডিটি ও বমির আশঙ্কা – Risk of acidity and vomiting:

লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। লেবুর স্বাদ টক।

লেবুর মধ্যে সাইট্রিক এসিড নামক এক ধরনের উপাদান থাকে।

তাই অতিরিক্ত পরিমাণে যদি লেবু খাওয়া হয় তাহলে আমাদের দেহে সাইট্রিক এসিডের পরিমাণত বৃদ্ধি পাবে।লেবুর রস অতিরিক্ত খেলে এসিডিটি বাড়ার সাথে সাথে আপনার বমিও হতে পারে।

রক্তে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি – Increased iron content in the blood:

লেবুর মধ্যে থাকে ভিটামিন সি আর এ ভিটামিন সি আমাদের বডিতে আয়রন ধরে রাখতে সাহায্য করে।

আর অতিরিক্ত লেবু পানি পান করার ফলে আমাদের দেহের থেকে আয়রনের ঘাটতি তো হয় না উল্টো বেড়ে যায়।যেটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

মাইগ্রেন প্রবলেম – Migraine problem:

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে লেবুসহ অন্যান্য টক জাতীয় ফল যে ফলের মধ্যে সাইট্রিক এসিড থাকেএই ফলগুলো আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

সাইট্রিক এসিড জাতীয় ফল গুলোর মধ্যে টাইরামাইন নামক একটি উপাদান থাকে।এই উপাদানটি আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

মুখমন্ডল বা ফেইসের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া – Facial cells are damaged:

অতিরিক্ত মাত্রায় দীর্ঘদিন ধরে যদি আমরা অতিরিক্ত লেবুর রস খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের ফেসের নরম কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এর ফলে আমাদের স্কিনে ব্রণ, ফোঁড়া, ফুসকুড়ি এবং গালে বিভিন্ন ধরনের দানা দানা হতে পারে।

পরে লেবু ছাড়াও অন্য যে কোন সাইট্রিক জাতীয় ফল খেলেও ক্ষতি হতে পারে।

শরীরের উৎসেচক ভেঙে যাওয়া – Breakdown of body tissues:

খালি পেটে অতিরিক্ত মাত্রায় লেবু খেলে শরীরের উৎসেচক ভেঙে যেতে পারে।

আমাদের বড়িতে পেপসিন নামক একটি উপাদান থাকে। পেপসিন উপাদানটি আমাদের শরীরে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

আর এ পেপসিনো মূলত আমাদের বডিতে যাওয়া প্রোটিন গুলো সজমে সাহায্য করে।

কিন্তু আমরা যদি অতিরিক্ত মাত্রায় লেবুর রস খেয়ে থাকি লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক এসিডের পেপসিন কে ধ্বংস করতে হেল্প করে।যেটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

সান বার্ন – sun burn:

অনেকের বডিতেই লেবু সুট করে না এমন অনেক মানুষ আছে। লেবু খেয়ে রোদে বের হলে স্কিন লাল হয়ে যায় চুলকানো শুরু করে এবং এলার্জি উঠে যায়।

ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে এই সমস্যা কে সাইটোফোটোডার্মাটাইটিস বলা হয়ে থাকে।

লেবুর মধ্যে থাকে সাইট্রিক এসিড এ সাইট্রিক এসিডের সাথে সূর্যের আলো বিক্রিয়া করে এই সমস্যা দেখা দেয়

।অতিরিক্ত লেবুর রস খাওয়ায় এবং লেবুর রস ব্যবহার করা স্কিনের জন্য অনেক ক্ষতিকর ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।

দাঁতের ক্ষতি – Tooth loss:

লেবুর মধ্যে থাকে সাইট্রিক এসিড আর এই অতিরিক্ত সাইট্রিক এসিড আমাদের দাঁতের ক্ষয় করে থাকে।এর ফলে দাঁতের উপর সাদা এক ধরনের স্তর পড়ে যায়।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সফট ড্রিংক খেলে দাঁতের যে ধরনের ক্ষতি হয় অতিরিক্ত লেবুর রস খেলেও আমাদের দাঁতে সেই ধরনের ক্ষতি হয়।

কিন্তু যারা অতিরিক্ত লেবু খান বা হচ্ছে গিয়ে শারীরিক চর্চা করেন এবং ডায়েট চারটে লেবুর রস রেখেছেন তারা কম করে হলেও দুবার দাঁত ব্রাশ করবেন।

এতে করে দাঁতের ক্ষতি অনেকাং সেই কমিয়ে আনা যায়। এতে করে দাঁতের এনামেল ক্ষয় দূর করা যায়।

পেটে ব্যথা – Abdominal pain:

যাদের অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তাদের লেবুটা একটু এভোয়েড করে চলা উচিত। লেবু খাওয়ার ফলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যাওয়ার ফলে আপনার গলার কাছে জ্বালাপোড়া এবং পেটে ব্যথা হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যাওয়া – Gastric enlargement:

অতিরিক্ত লেবু খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যেতে পারে। কারণ লেবুর মধ্যে থাকে ভিটামিন সি এবং অতিরিক্ত সাইট্রিক এসিড।

আর এই সাইট্রিক এসিডের কারণে আপনার গ্যাস্ট্রিক আরো বেড়ে যেতে পারে।

পেট ফাঁপা – flatulence:

অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে বা লেবু খেলে আপনার পেট ফাঁপা হলে আপনি লেবু খাওয়ায় এভোয়েড করবেন। কারণ অনেক মানুষই আছে যাদের লেবু সুট করে না।

তাই সুট না করা অবস্থায় যদি আপনি লেবু খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার পেট ফুলে দিতে পারে পেট ফাঁও দিতে পারে।

. ভরা পেটে লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা- Benefits of drinking lemon water on a full stomach:

ভরা পেটে লেবু পানি খেলে উপকার হয়। লেবুর মধ্যে থাকে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লেবু আপনার হজম শক্তিকে বাড়াতে পারে।

আপনি যদি লেবুর রস খান তাহলে আপনার তাড়াতাড়ি পেটের খাবারগুলো হজম হবে।

. ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা- Benefits of drinking lemon in cold water:

আপনি লেবুর রস ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। অনেকে আছে যারা লেবুর রস সরাসরি খেতে পারে না তারা সাধারণত পানির সাথে মিশিয়ে লেবুর রস খেতে পারেন।

লেবুর রস আমাদের শরীরের জন্য উপকারী এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ঠান্ডা পানির সাথে লেবুর রস মিলিয়ে খেলে লেবুর গুনাবলী বজায় থাকে।

খালি পেটে ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে লেবু রস খান সেটাও আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। সকালে খালি পেটে লেবু জল খেলে কি,হয় ক্ষতি করে কিনা? তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে খালি পেটে লেবুর রস খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।

কিন্তু সকালে খালি পেটে যদি লেবু জল খেতে পারেন তাহলে সেটা উপকারী।

. কুসুম গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়ার উপকারিতা- Benefits of drinking lemon and honey in hot water:

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে যদি মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পানির সাথে উষ্ণ গরম পানিতে খাওয়া যায় তাহলে আমরা অনেক ধরনের রোগ বিয়াদি থেকে মুক্তি পেতে পারি।

পেট ফুলে থাকা, পেট ফাঁপা বুকে ব্যথা সহ পাকস্থলীতে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন থাকে এই প্রবলেমগুলো দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে লেবু ও মধু।

লেবুর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম আমাদের স্বাস্থ্যকে সুস্থ সবল রাখতে সহায়তা করে।

. রাতে গরম পানিতে লেবু খাওয়ার উপকারিতা- Benefits of drinking lemon in hot water at night:

রাতে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে ছেলেটাই আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। অনেক সময় রাতে খাওয়ার পর আমাদের অস্থির ফিল হয়।

আমাদের বুকের মধ্যে গলার কাছে এবং মুখের মধ্যে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। এই সমস্যাটা হয় আমাদের গ্যাস্টিকের কারণে।

ওই অস্থির অবস্থায় আপনি যদি একটু গরম হালকা কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।

তাহলে আপনার এই অস্থিরতা কষ্ট জ্বালাপোড়া খুব সহজেই সেরে যাবে।

হালকা কুসুম গরম পানি আপনার পেটের খাবার হজমের সহায়তা করবে এবং লইপুর রস আপনার গ্যাস্ট্রিক কমাতে সাহায্য করবে।

. গরম পানিতে লেবু খাওয়ার অপকারিতা – Disadvantages of consuming lemon in hot water:

গরম পানিতে লেবু খেলে আমাদের বডির অনেক ধরনের এনজাইম নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

আমাদের বডিতে থাকা উপকারী পেপসিনো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমাদের বডির হাড়ের ক্ষতি হতে পারে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।

অতিরিক্ত লেবু খেলে আমাদের ঘন প্রস্রাব হয় রিবের ফলে আমাদের দেহ ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে সেই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

আমাদের বডির আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। পেট খারাপ হতে পারে পেটে ব্যথা হতে পারে।

. সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার অপকারিতা- Disadvantages of drinking hot water with lemon on an empty stomach in the morning:

আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছে যাদের অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে। লেবু একটি অম্লীয় ধর্মীয় উপাদান। গরম পানিতে লেবু খাওয়া উচিত নয়।

যাদের অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক আছে তারা যদি গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খায় তাহলে তাদের গ্যাস্ট্রিক আরো বেড়ে যেতে পারে এবং দাঁতেরও ক্ষতি হতে পারে।

তাই সকালে খালি পেটে গরম পানি ও লেবুর রস খাওয়া উচিত নয়।

কিন্তু যদি আপনি লেবুর রস খেতে চান তাহলে সকালে ঠান্ডা পানিতে অথবা উষ্ণ গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন।

সতর্কতা:

লেবু অনেক উপকারী উপাদান কিন্তু যদি আপনার লেবু খেলে কোন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।

Shamira

Recent Posts

মধুর উপকারিতা – Benefits of honey

মধু অত্যন্ত উপকারী প্রকৃতিক উপাদান। মধু আমাদের স্বাস্থ্যের দিক থেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করতে পারে। সৌন্দর্য…

1 month ago

ত্বকের যত্নে লেবু – Lemon for skin care

লেবু তার অসংখ্য গুণে গুনাবলির জন্য অন্যতম ।ত্বকের যত্নে লেবু অনেক উপকারী ।লেবুর মধ্যে থাকা…

2 months ago

ত্বকের যত্নে নিম – Neem in skin care

ত্বকের যত্নে নিমপাতা এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কম বেশী সবাই জানি । কারণ ছোটবেলায় দিদার…

2 months ago

নিম পাতার উপকারিতা – Benefits of Neem Leaves

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম পাতার উপকারিতা র (nim patar…

2 months ago

ত্বকের যত্নে হলুদ – Turmeric in skin care

প্রাচীন আমল হতেই রূপচর্চায় ও ত্বককে সুন্দর করার জন্য হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে।প্রাচীনকালের মেয়েরা নিজেদের…

2 months ago

হলুদের উপকারিতা-Benefits of Turmeric

প্রাচীন আয়ুর্বেদে  হলুদকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ এটি  শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, জীবাণুনাশ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ।…

2 months ago