আমরা অনেকেই ঠান্ডা বা গরম ও সকাল কিংবা সন্ধ্যায় যাই হোক না কেন এক কাপ চায়ের অপেক্ষায় থাকি।
মন ভালো করতে এবং শরীরকে চাঙ্গা করতে এক কাপ চায়ের কোন বিকল্প নেই।
তবে যদি, সেই চায়ের সঙ্গে একটু আদা যোগ করা যায়, তাহলে তার স্বাদ ও উপকারিতা কয়েক গুণ বেড়ে যায় ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আদা-চা কেবল মাত্র স্বাদেই সুস্বাদু তা কিন্তু নয় , এটি আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় ও খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আদা চায়ের উপকারিতা অনেক।
প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে আদার মধ্যে, যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণুর আক্রমণ ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
বিশেষ করে আমাদের যদি গলাব্যথা, হালকা জ্বর ও মাথাব্যথা হয় তখন এটি স্বস্তি এনে দেয়।
এছাড়া এতে রয়েছে অনেক ধরনের ভিটামিন যেমন: ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম এবং আরও অনেক খনিজ উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে।
আদা আমাদের মোশন সিকনেস কমাতে সাহায্য করে।
যাত্রাপথে যাত্রা করার আগে যদি এক কাপ আদা-চা খাওযা যায় তাহলে বমিভাব, বমি হওয়া কমে এবং মাথা বেথা করা বা মাথা ঘোরানো, মাথার ভাড়ি অনুভব দূর হয়।
আমাদের পেটের যেকোনো ধরনের অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে আদা।
অনেক সময় হজমে সমস্যা হলে বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে, বেশি খাবার ফললে খাবার হজম না হওয়ায় আদা-চা দ্রুত আরাম এনে দেয়।
তাই পেটে যে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সাথে সাথে এক কাপ আদা চা খেলে অনেকাংশেই পেটের ব্যথা বা যে কোন সমস্যা কিছু সময়ের জন্য হলেও দূর হয়।
আদা চা হজম শক্তিকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।
যেটা আমাদের জন্য অনেক সময় স্বস্তিদায়ক হয়।
যাদের হজমের সমস্যা আছে তাদের জন্য মহা উপকারী ঔষধ হচ্ছে আদা চা।
কারণ আদা চা খেলে আমাদের হজম শক্তি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
পেটে যেকোনো ধরনের অস্বস্তি শুরু হলে যদি এক কাপ আদা চা খাওয়া যায় খুব তাড়াতাড়ি সময় আরাম পাওয়া যায়।
আদা আমাদের বদহজমের সমস্যা দূর করে।
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে গ্যাস বা অম্ল দূর করতে সাহায্য করে আদা চা।
আদা চা খেলে আমাদের হজম শক্তি বেড়ে যায় , ও আমাদের দেহে খাদ্য তাড়াতাড়ি হজম হয়।
যা আমাদের বডির জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং পেটের জন্য স্বস্তি বয়ে আনে।
দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা অবসাদে বা ডিপ্রেশনে ভুগে থাকি।
কিন্তু আদা আমাদের ডিপ্রেশন বা অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে।
এক কাপ আদা চা হতে পারে ডিপ্রেশন দূর করতে উপকারী বা সহায়কারী।
কারণ আদা দিয়ে বানানো এক কাপ গরম চা আপনার শরীর ও মনকে এক মুহূর্তের মধ্যে চাঙ্গা করে দিতে পারে।
যেকোনো ধরনের মাথা ব্যথা ও অবসাদ দূর করে দিতে পারে মুহূর্তেই।
গরম এক কাপ আদা-চা আমাদের ক্লান্তি দূর করে আমাদের শরীর মনকে চাঙ্গা ও সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে।
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের টেনশনের কারণে মানসিক চাপে ভুগি।
এই মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে আদা চা।
অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে আমাদের দেহে এনজাইটি বা অস্থিরতা দেখা দেয়।
এই এনজাইটিও বা অস্থিরতা কমাতেও সাহায্য করে আদা চা।
তাই যারা মানসিক চাপে ভুগছেন অবশ্যই নিয়ম করে তিনবার বা চারবার আদা চা খাবেন এটা অনেক উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য।
এক কাপ আদা চা কিছু সময়ের মধ্যে আপনার শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে।
এটি আমাদের শরীর ও মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
প্রাচীনকাল থেকে মানুষের কাশি, হাঁচি, ঠান্ডা বা যেকোনো ধরনের কোল্ড হলে আদা চা খেয়ে থাকে।
আদাকে প্রাকৃতিক ঔষধ বলা হয়।
হাঁচি কাশির মতন সমস্যায় আদা চা ম্যাজিকের মতন কাজ করে। খুসখুসে কাশি ও কফ দূর করতে সাহায্য করে আদা চা।
তাই শীতকালে মানুষের আদা চা খাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
আদা চা বাচ্চা বুড়ো থেকে শুরু করে সবার জন্যই কার্যকারী।
শীতকাল আসলেই আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাতে সর্দি কাশি লেগেই থাকে।
যাদের এই ধরনের সমস্যাগুলো রয়েছে তারা অবশ্যই তিন থেকে চারবার আদা চা খাবেন এটা খুব ভালো কাজ করে বডির জন্য।
সর্দি কাশির সময় আদা চা খেলে অনেক আরাম পাওয়া যায় নাক খুলে যায় কাশিও কমে যায়।
শীতকালে আমাদের সর্দি প্রবণতা অনেক অংশে বেড়ে যায়, নাক আটকে থাকে, তাই সর্দি হলে এক কাপ গরম গরম আদা চা খেলে নাকটা খোলা খুলে যায়।
শ্বাস নিতে কষ্ট হয় না গলার কফ দূর করতে সাহায্য করে আদা চা ।
অনেক সময় আমাদের খাবার খেতে ইচ্ছে করে না অরুচি চলে আসে মুখে।
জ্বর, সর্দি, কাশি হলে আমাদের মুখে বেশিরভাগ সময়ে অরুচি চলে আসে।
রোগের কারন ছাড়াও অনেক সময় শুধু শুধু আমাদের খেতে ইচ্ছা করে না।
অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণেও হয়।
অনেক সময় আমাদের পেটে খাবার ঠিক মতন হজম হয় না সেই কারণেও আমাদের খেতে ইচ্ছে করে না।
এই সমস্যা দূর করতে পারে আদা।
আদা চা আমাদের মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে এবং পেটের ভারী ভাব কমাতে সহায়তা করে।
এরকম বাজে অনুভব হলে আমরা যদি গরম গরম এক কাপ আদা চা খাই দিনে তিনবার তাহলে খাদ্যের রুচি বাড়াবে এবং হজমে সহায়ক এনজাইম নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যাবে যার ফলে আমাদের ক্ষুধা লাগবে।
এবং মুখের অরুচি দূর হবে।
আদা আমাদের বডির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেমকে বুস্ট করতে বা বাড়াতে সাহায্য করে।
কারণ আদার মধ্যে উচ্চমাত্রায় এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার থাকে।
যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বাড়াতে সাহায্য করে।
শুধু রোগ হলেই আদা চা খেতে হবে এমন নয়। অন্যান্য চায়ের থেকে আদার চা আমাদের বডির জন্য খুবই উপকারী।
একজন সুস্থ ব্যক্তির রোজ দুবার কম করে হলেও আদা চা খাওয়া উচিত।
এতে করে অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে আমরা মুক্তিত হবই সাথে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বা প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
তাই বলাই যায় আমাদের বডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বা ইউনিটি সিস্টেমকে বুস্ট করার জন্য রেগুলার আমাদের এক কাপ আদা চা খাওয়া উচিত।
এইটি আমাদের বডির চর্বি কমাতেও সাহায্য করে।
আদা আমাদের হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা আমাদের দেহের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে বা উন্নত করতে সাহায্য করে।
এবং আমাদের রক্তনালী বা ধমনীতে চর্বি জমা হতে বাধা দেয়।
যার কারনে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায় অবিশ্বাস্যভাবে ।
অনেক সময় আমরা গরম পানি খেতে দেখি চর্বি কমানোর জন্য।
কিন্তু আমরা যদি গরম পানির সাথে আদা এবং একটু হালকা চা পাতা নেই।
তাহলে এটা অনেকাংশে উপকারিতার পরিমাণ বেড়ে যায়। আদা চা হার্টের রোগীদের জন্য খুব উপকারী।
যদি চিনি ছাড়া তিনবার আটা চা খাওয়া যায় তাহলে সেটা অত্যন্ত কার্যকর।
বর্তমান সময়ে আমরা এত ব্যস্ত যার কারণে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের কোন ঠিক নেই। আ
মরা কেউই ঠিক মতন খাবার খাই না সময় মতন।
এবং বাইরের স্ট্রীট ফুড, অতিরিক্ত অয়েলি ফুড এবং রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে থাকি বেশি পরিমাণে।
তার কারণে আমাদের বেশি পরিমাণে অম্ল বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়।
এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার মহা ঔষধ হয়ে উঠতে পারে আদা চা।
আমরা যদি নিয়মিত আগাছা পান করতে পারি তাহলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের পরিমাণ অনেকাংশেই কমে যাবে।
অম্ল বা গ্যাস দূর করতে এটি খুবই এফেক্টিভ।
প্রাকৃতিকভাবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত আদা চা খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন এক কাপ আদা চা হতে পারে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য একটি মহা ঔষধ।
এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
এবং আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বুস্ট করার পাশাপাশি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ানোর একটি সহজ ও শক্তিশালী উপায়।
তবে সব প্রাকৃতিক উপাদানেরই একটি মাত্রা রয়েছে।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় এটিও তার ব্যতিক্রম নয়।
তাই সতর্কতার সাথে ও চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েও আদা চা খেতে পারেন। কারণ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য তালিকায় আলুর ভূমিকা অপরিসীম। আলুর কথা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে…
আলু একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর সবজি। আলুর উপকারিতা - alur upokarita , অসাধারণ গুনুগুন,…
লেবুর চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি, সহজ ও শক্তিশালী পানীয়। টি সাধারণ পানীয় হলেও…
সকালটা শুরু হয় এক কাপ গরম গরম চা দিয়ে। সকালে উঠে এক কাপ চা না…
বর্তমান সময়ে দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অনিয়মিত জীবনযাপন, বাহিরে বের হলে করা রোদ, ধুলো-বালির ফলে…
আদা হলো প্রাকৃতিক এক মহৌষধ। প্রাচীনকাল থেকে লোকমুখে একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে সেটা হলো -সকল…