আপেল খাওয়ার উপকারিতা অনেক। শুনেছি প্রতিদিন যদি কোন মানুষ ১টা করে আপেল খেয়ে থাকে, তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। কথাটা পুরোপুরি সঠীক না হলেও আপেল এর উপকারিতা কিন্তু অনেক। এটি একটি পুষ্টিকর ফল, যা বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেলস, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর ।
সুস্থ জীবন যাপনের জন্য ও সুস্থভাবে বাঁচার জন্য হলেও খাদ্য তালিকায় আমাদের আপেল রাখাটা জরুরী।
বাজারে পাওয়া যায় না সব সময় এমন অনেক ফল আছে। কিন্তু আপেল এমন একটি ফল যা বাজারে সব সিজনে কম বেশি পাওয়াই যায়।
আপেল অন্যতম পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল।প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত করবে ।
ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তুলবে। তাহলে জেনে নেই আপেলের উপকারিতা (Benefits of Apples) – ও গুনাগুন সম্পর্কে?
. আপেলের পুষ্টিগুণ,আপেলের উপকারিতা ও আপেলে কি ভিটামিন থাকে?
আপেল একটি পরিপূর্ণ ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল।আপেলের গুণাবলী ও আপেলের মধ্যে কি কি ভিটামিন থাকে সেটা আমাদের অনেকেরই অজানা ।
আপেলের মধ্যে নানা ধরনের ভিটামিন থাকে যেমন – ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম, ক্যালরি বা খাদ্যশক্তি ৫২, ফাইবার ২.৪, ভিটামিন A ৫৪ মিলিগ্রাম, লৌহ 0.12 মিলিগ্রাম,
শর্করা 13.81 গ্রাম, ভিটামিন ই 0.18 মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম,আমিষ 0.২৬ মিলিগ্রাম, বিটা ক্যারোটিন ২৭ আইইউ, সোডিয়াম 1 মিলিগ্রাম,
ম্যাগনেসিয়াম 5 মিলিগ্রাম,ফসফরাস 11 মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম 6 মিলিগ্রাম, জিংক 0.04 মিলিগ্রাম, বিটা ক্যারোটিন 27, সোডিয়াম 1 মিলিগ্রাম,
কোলেস্টেরল নেই 0 মিলিগ্রাম, পানির অংশ 85.56 গ্রাম, নিয়াসিন ০.০৯১ মিলিগ্রাম, লুটেইন ২৯ আইইউ, ভিটামিন কে ২.২, রিবোফ্লোবিন ও প্যানটোথনিক অ্যাসিড, ফ্লোরাইড৩.৩, চিনি 10.39 মিলিগ্রাম, আরো অনেক জানা অজানা অনেক ধরনের ভিটামিন আছে এই ফলে।
আপেল খাওয়ার উপকারিতা? (Benefits of eating apples):
আপেল এমন একটি ফল যে ফলটিকে সর্বগুণে গুণান্বিত একটি ফল বলা যায়, কারণ আপেল অনেক ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। আপেল হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ওজন বাড়ানোর ঝুঁকি কমায় ।
এবং হজমে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন C শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । যা সর্দি-কাশি ও অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে ।
তাহলে জেনে নেই আপেলের কিছু উপকারিতার কথা :
১) ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ওজন কমানো (Weight control or weight loss) :
অনেকের মনে একটা প্রশ্ন কাজ করে আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে? ওজন কমাতে আপেলের ভূমিকা অপরিসীম।কারণ আপেলের মধ্যে অনেক বেশ ফাইবার ও পানি থাকে।
যখন আমাদের ক্ষুধা লাগে, তখন যদি আমরা বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড বা তৈলাক্ত খাবার না খাই। যদি একটা আপেল খাই । তাহলে আমাদের বডিতে কোন প্রকার জাঙ্কফুড গেলো না ।
আমাদের পেটে ভরা থাকলো। আর আপেলে ফাইবার ও পানি থাকার কারণে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, ক্ষুধা কম লাগে।
আপেলে থাকা ফাইবার আপনার পেট ভরাতে সাহায্য করে কোন প্রকার ক্যালরি ছাড়া। যারা অধিক ওজনে জর্জরিত, অধিক ওজনের কারণে শরীরে নানা ধরনের রোগ ব্যাধি ছড়ানো শুরু করেছে।
কিছুতেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তাদের জন্য আপেল আল্লাহর রহমত স্বরূপ।
কারণ কোনরকম ক্যালরি গ্রহণ না করেও আপেলের মাধ্যমে পেট ভরিয়ে রাখা সহজ ।
কারণ এর মাধ্যমে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে কষ্ট হবে না। কিছু না খেয়ে ওজন কমাতে হবে না।
২) শরীরের রোগ প্রতিরোধ(The body’s resistance to disease) :
প্রতিদিন আপেল খাওয়ার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারে। কারন হলো আপেলের মধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আপেলের মধ্যে থাকা সেই এন্টিঅক্সিডেন্ট এর নাম হল কোয়েরসেটিন ।
আর এই কোয়েরসেটিন ই মূলত আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৩) কোলেস্টেরল কমায় (Lowers cholesterol):
আমরা জানি বাড়তি কোলেস্টেরল একজন মানুষের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর।
আর এই অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের জন্যই হার্টে প্রবলেম বা হৃদ রোগ হয়ে থাকে।
এই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বা কোলেস্টেরল কমাতে আপেলের ভূমিকা অপরিসীম, কারণ আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার ও ফ্লাভোনয়েড স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশই কমিয়ে দেয়।
কারণ আপেলের ফাইবার হার্টের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন আপেল খাওয়ার ফলে শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
তাই যাদের হাই কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তাদের আপেল খাওয়া উচিত।
কারণ আপেল খাওয়ার ফলে খারাপ কোলেস্টেরল গুলো আস্তে আস্তে শরীর থেকে বের হয়ে যাবে।
৪) হৃদপিণ্ড বা হার্ট ভালো রাখে (Heart keeps well):
আপেলের মধ্যে হাই লেভেলের ফাইবার পাওয়া যায়, আর এই ফাইবারই মূলত আমাদের দেহ থেকে সকল প্রকার খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দেয়।
আর অবশ্যই আমাদেরকে আপেল ছোলা সহ খেতে হবে।
কারন আমরা অনেকে আছি যারা আপেলের খোসা ফেলে খেয়ে থাকি।
যেটা ঠিক নয় কারন আপেলের থোসাতে ফেনলিক নামক উপাদান থাকে । যা মানুষের শরীরের রক্ত থেকে খারাপ কোলেস্টেরল বাদ দিতে সাহায্য করে।
আর খারাপ কোলেস্টেরল কমে যাওয়ার ফলে হৃদপিন্ডের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
হার্ট ফেলিওর বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে যায়। তাই আমাদের প্রতিদিন আপেল খাওয়া জরুরী।
৫) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ (Diabetes control):
আপনি কি জানেন? মানুষ প্রতিদিন যদি আপেল খায় তাহলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা 28% পর্যন্ত কমে যায়।
জেনে অবাক হচ্ছেন তাই না? কি করে আপেল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে? বলছি শুনুন , আপেলের মধ্যে থাকা হাই ফাইবার রক্তে শর্করার পরিমাণ ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া আপেলে পেকটিন নামক একটি উপাদান থাকে।
আর এই পেকটিন নামক উপাদানটি মানুষের শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ।
তার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৬) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়(Reduces the risk of cancer) :
অগ্নাশয় ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমাতে আপেল কাজ করে। নিয়মিত আপেল খেলে অগ্নাশয় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা 23% পর্যন্ত কমে যায়।
ফ্ল্যাভোনল, ফাইটোকেমিক্যাল ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আপেলের মধ্যে অনেক বেশি মাত্রায় থাকে ।
এছাড়া আপেলের মধ্যে ট্রিটারপেনয়েডস নামক একটি উপাদান পাওয়া গেছে।
যা স্তন, লিভার ও কোলন ক্যান্সার হতে বাধা দেয় ।
আপেলে ফাইবার থাকে যা ময়লাশয়ে ক্যান্সার হতেও বাধা দেয়।
৭) গলস্টোন নিরাময় (Gall Stone Cure):
মানুষের পিত্তথলিতে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল জমার ফলে গলস্টোন রোগ হয় ।
আর এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ডাক্তার অনেক সময়ে ফাইবার জাতীয় ফল ও খাদ্য খেতে বলে ।
আর আপেলে ভরপুর ফাইবার পাওয়া যায়।
৮) হজমের সমস্যা(Digestive problems) :
আপেলের মধ্যে পেকটিন নামক উপাদান থাকে, এই পেকটিন মানুষের শরীরে প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, এবং প্রিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া হজমের সমস্যা দূর করে।
৯)দাতের উপকার :
আপেল খাওয়া দাঁতের জন্য অনেক উপকারী। আপেল খেলে দাঁত ভালো থাকে ও ত্বক ভালো থাকে।
আপেল আপনার দাঁতকে সাদা করতে সাহায্য করে।
যাদের দাঁত হলুদ তারা প্রতিদিন একটা করে আপেল খেলে দেখবেন কিছুদিন পর দাঁতের আর এই হলুদ ভাব কমে গেছে।
প্রতিদিন আপেল খাওয়ার ফলে আপনার দাঁত হয়ে যাবে থবধবে সাদা।যাদের মুখ থেকে গন্ধ আসে।নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর কারণে।
তারা অবশ্যই রোজ একটি করে বা দুটি করে আপেল খাবেন। এতে করে আপনার মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে । মুখ থেকে এবং দাঁতে কোন প্রকার সমস্যার হবে না।
আপেলের মধ্যে থাকা পানি মুখের ও দাঁতের ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
দৃষ্টব্য : পরিশেষে বলাই যায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না ।
আপেল খাওয়ার অপকারিতা?- Disadvantages of eating apples :
আপেল খাওয়ার যেমন অনেক উপকারিতা আছে, ঠিক তেমনি আপেল খাওয়ার অপকারিতা ও আছে। তাহলে কিছু আপেল খাওয়ার Disadvantages জেনে নেই :
১) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা (Constipation problems):
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাদের জন্য সবুজ আপেল খাওয়া একদমই ঠিক নয় ।
কারণ আপেলের মধ্যে থাকা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদানটি পরিপাকতন্ত্র ও কোলনকে আরো বেশি শুষ্ক করে দিতে পারে ।
যেটা কোষ্ঠকাঠিন্য কে আরো তীব্র মাথায় বাড়িয়ে দিতে পারে।
যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে থাকে তাহলে আপনি সিদ্ধ করে খেতে পারেন।
২) অতিরিক্ত আপেল খাওয়া (Eating too many apples):
অতিমাত্রায় কোন কিছুই ভালো না। আপেল ও তার ব্যতিক্রম নয়। সঠিক নিয়মে একজন মানুষ প্রতিদিন দুটি করে আপেল খেতে পারবে।
আমরা হয়তো জানিনা চিকিৎসকের ভাষায় প্রতিদিন দুইটার বেশি আপেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ আপেলের মধ্যে থাকে হাই ফাইবার।
আর ফাইবারএর কারণে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে।
তাই আমরা যদি অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবার খাই, তাহলে আমাদের পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফ্যাপা ও পেট ফুলেও যেতে পারে । বমি হতে পারে।
ফাইবার ছাড়াও আপেলের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা থাকে । আর কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যেকোনো সাধারণ মানুষের জন্যই ক্ষতিকর।
কারণ এই কার্বোহাইড্রেট রক্তের সুগার লেভেল অনেক বাড়িয়ে দেয়।
তাই প্রতিদিন নিয়ম করে দুটোর বেশি আপেল খাওয়া উচিত নয়।
৩) আপেলের কীটনাশক (Pesticides of apples):
আপেল চাষের ফল। আর বর্তমানে চাষবাসের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। এর ফলে আপেলের মধ্যে কীটনাশক গুলো ছড়িয়ে পড়ে।
ভালো করে প্রসেস করে যদি আমরা আপেলটা না খাই । তাহলে আপেলের সাথে কীটনাশক ও রাসায়নিক পদার্থ গুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
যেটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আপেল বেশি পরিমাণে খেলে অন্ত্রে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই রাসায়নিক পদার্থগুলো আমাদের শরীরে গিয়ে অন্ত্র বা পাকস্থলীতে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এবং মলদ্বারে ক্যান্সার এবং মলদ্বারে নানা ধরনের ইনফেকশন ও হতে পারে।
ফল থেকে যাওয়া রাসায়নিক পদার্থ আমাদের রক্তে পৌঁছে রক্তে দূষিত ও খারাপ পদার্থের পরিমাণ অনেক গুণ বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে।
যার ফলে আমরা অনেক বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারি। এবং মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই আপেল প্রসেস করে বা সঠিক নিয়মে খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।
আপেল খেলে কি গ্যাস হয়?( Does eating apple cause gastric) :
আমরা অনেক সময় শুনে থাকি মানুষের মুখে আপেল খেওনা আপেল খেলে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। বা আপেল খেলে গ্যাস বেড়ে যেতে পারে।
আবার অনেক মানুষ বলে থাকে আপেল খেলে গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস হয় না । আসলে এটা কতটুকু সত্য আসুন জেনে নেই:
আপেলে যে পিএইচ থাকে সেই পিএইচ এর মাত্রা হলো 3.5। বেশিরভাগ আপেল সাধারণত একটু মাঝারি ধরনের অম্লীয়ভাবের হয়ে থাকে। কিছু আপেল আবার একটু পানি পানি টাইপ হয়।
আবার কিছু আপেল একটু টক হয়, আবার কিছু আপেল মিষ্টিও হয়। কিন্তু বেশিরভাগ আপিল একটু অম্লিও টাইপের হয়।
সেই কারণে হয়তো মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত শুরু হয়ে যায়। কিন্তু আপেল খেলে সাধারণত গ্যাস বা অম্ল হওয়ার কথা নয়। এমনিতেই আপেল হজম হওয়ার কথা কারণ আপেলে আছে হাই ফাইবার।
আর এই ফাইবারের কারণে হজমে সমস্যা হওয়ার কথা না।
সাধারণত আপেল খেলে গ্যাসের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপরেও যদি আপেল খেলে সমস্যা হয়।
তাহলে আপেলটি সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। আর সিদ্ধ করে আপেল খেলে গ্যাস বা অম্ল হওয়ার সম্ভাবনা একদমই থাকে না। চিকিৎসকদের মুখ থেকে শুনেছি কোষ্ঠকাঠিন্য সাথে আপেলের কোন সম্পর্ক নেই ।
কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলেও আপেল খেতে পারবে। কিন্তু সেটা নিয়মতো , অতিরিক্ত নয়।
আপেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম (The right way to eat apples):
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ,পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক এর মতে সকালবেলা আপেল খাওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সকালে আপেল খাওয়া ভালো। অন্য সময়ের থেকে। অথবা খাবার খাওয়ার অন্তত 2 ঘন্টা পর আপেল খাওয়া উচিত।
তবে কোন দুগ্ধ জাত খাবারের সাথে মিশিয়ে আপেল খাওয়া উচিত না। কারণ আপেলের মধ্যে সাইট্রিক এসিডও থাকে । আর এই সাইট্রিক অ্যাসিড ল্যাকটিক এসিডের সাথে মিশে বিক্রিয়া করে হজমে বাধা সৃষ্টি করে ।
তার ফলে আপনার পেটে ব্যথা হতে পারে । বমি হতে পারে পেট ফুলেও যেতে পারে । তাই দুগ্ধজাত দ্রব্যের সাথে আপেল খাওয়া মিক্স করে খাওয়া উচিত না। তাই নিয়ম মাফিক আপেল খাওয়া উচিত।
আপেল খেলে কি ওজন বাড়ে?( Does eating apples increase weight?):
আপেল আপনাকে ওজন বাড়াতে নয় ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করবে।
কারণ আপেলের মধ্যে ক্যালরি অনেক কম থাকে। ফাইবার অনেক হাই থাকে।
আর এই ফাইবার আপনার পেট ভরা রাখতে অনেক সাহায্য করে।
আপেলের মধ্যে অনেক ধরনের ভিটামিন থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
আর এইজন্য প্রতিদিন আপেল খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।
পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
খালি পেটে আপেল খেলে কি গ্যাস হয়?( Does eating apples on an empty stomach cause gas?):
খালি পেটে আপেল খেলেও সাধারণত গ্যাস, অম্ল বা গ্যাসের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কারণ আপেল খেলে আপেল সবসময় পেটে এনিতে হজম হয়ে যায়।
আপেলের মধ্যে রয়েছে ফাইবার আর আপেল খেলে হজমের সমস্যা হওয়ার কথাই না ।
তাই গ্যাস বা অম্বল হওয়ার কোন কথা না।
তারপরও যদি মনে হয় যে আপেল খেলে আপনার প্রবলেম হয় ।
তাহলে আপনি আপেল সিদ্ধ করে খেতে পারেন। তাহলে আপেল থেকে কোন ধরনের সমস্যা হওয়ার কোন কথাই না।
আপেল সেদ্ধ খেলে কি হয়?( What happens when you eat boiled apples?):
সর্বোত্তম উপায় আপেল খাওয়ার হলো আপেলটা কাঁচা খাওয়া।
আপেল রান্না করে বা সিদ্ধ করে খেলে আপেলের কিছু কিছু উপাদানের উপর ইফেক্ট করে। তাই আপেলটা কাঁচা খাওয়াই উত্তম। তবে যাদের কাঁচা আপেল খেতে সমস্যা হয় তাহলে সে রান্না করে খাবে।
অথবা সিদ্ধ করে খেতে পারে।। এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। আপেল আমরা যেভাবেই খাই আপেলের উপকারিতা আমরা অস্বীকার করতে পারব না।
আপেল খেলে কি ঠান্ডা লাগে?( Does eating an apple make you feel cold?) :
সর্দি বা কাশি হলে আপেল ফলটি কম খাওয়া উচিত । কারণ এই আপেল ফলটি খেলে শরীরের ভিতর শীতল প্রভাব হয় ।
আর শীতল প্রভাবের কারণে সর্দি কাশি আরো বাড়তে পারে।
আপেল খেলে কি প্রেসার বাড়ে?( Eating apples increases the pressure?) :
আপেলের মধ্যে রয়েছে হাই ফাইবার যেটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে 100 থেকে 150 গ্রাম আপেল প্রতিদিন খেলে হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশই কমে যায় ।
কারণ আপেলের মধ্যে থাকা হাই ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে । তাই আপেল খেলে প্রেসার বাড়ার কথা নয়।
আপেল খেলে কি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে?( Eating apples is good for mental health?) :
আপেলের মধ্যে যে উচ্চ এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে সেটা আমাদের বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে। এই আপেল ফলটি মানুষের বিষন্নতা 21% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন আপেল খেলে মন মানসিকতা ফুরফুরে থাকে।
তাই বলাই যায় আপেল আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটা করে হলেও আমাদের আপেল খাওয়া উচিত।
কারণ এই আপেল ফলটি আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ রাখেই সাথে মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
সতর্কতা :
আপেল খাওয়া সহজ এবং সুস্বাদু । তাই এটি খাদ্য তালিকায় আপেল রাখা খুব দরকারী। তবে, একা আপেল খেলে পুরোপুরি স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান হবে না । নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যাভ্যাসও প্রয়োজন ।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সব ধরনের টিপস পেতে The Web Act ওয়েবসাইটটি সব সময় আপনাকে সাহায্য করবে ।
Leave a Reply